বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়েপড়া করোনাভাইরাস সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯ মোকাবেলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এসব সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে অন্যতম ভূমিকা পালন করছে বাংলাদেশ পুলিশ।
শনিবার (২৮ মার্চ) পর্যন্ত সারাবিশ্বে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৭ হাজারেরও বেশি মানুষ। বাংলাদেশেও এপর্যন্ত পাঁচজন মারা গেছেন ও মোট ৪৮জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
এই পরিস্থিতিতে সরকারি ও বেসরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে সাধারণ জনগণ প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন ও হোম কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন মেনে চলছে কিনা, সে বিষয়ে চিকিৎসকদের পরই ভূমিকা রাখছেন আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা। তবে দেশের স্বার্থে নিয়োজিত এই বাহিনী নিজেরা কতটুকু নিরাপদ, তা নিয়ে জন্ম হচ্ছে একের পর এক প্রশ্ন।
গত শনিবার করোনাভাইরাসে দ্বিতীয় মৃত্যুর খবরে মিরপুরের ৩২টি পরিবারকে কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। এসময় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে এই দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়।
পরদিন রবিবার একই এলাকায় আরও এক ব্যক্তির মৃত্যুর সংবাদে পুলিশ সদস্যদের সংখ্যা বাড়ানো হয় ওই এলাকায়।
মিরপুর থানাসহ বিভিন্ন থানা, হাসপাতাল, বিমানবন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় দায়িত্বপালনকালে পুলিশকে বেশিরভাগ সময়ই সাধারণ পোশাকেই দেখা গেছে। খুবই কমসংখ্যক পুলিশকেই কোভিড-১৯ রোগ প্রতিহত করতে পারে এধরনের সরঞ্জামাদি ব্যবহার করতে দেখা গেছে।
এপ্রসঙ্গে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর ডিভিশনের অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার মাহমুদা আফরোজ লাকি বলেন, “দায়িত্বরত পুলিশদের ফেস মাস্ক ও হাতের গ্লাভস ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।”
উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা থানা ও ব্যারাক
বিভিন্ন থানায় সরেজমিনে ঘুরে দায়িত্বরত বেশিরভা্গ পুলিশ সদস্যদেরই কোনও পিপিই বা পারসোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করতে দেখা যায়নি।
তবে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে থাকা পুলিশ সদস্যদের ডিউটি শেষ করে ফিরে আসার পর থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে তাদের তাপমাত্রা নির্ণয় করা হয়। এছাড়া বেশিরভাগ পুলিশ সদস্যদেরই ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে হাত-পা ধুতে ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে দেখা গেলেও এখনও পর্যন্ত কোনও পুলিশ সদস্যে শরীরে করোনাভাইরাস রয়েছে কি-না তা পরীক্ষা করা হয়নি।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় ১৪০ জন পুলিশ সদস্য রয়েছে, প্রতি সাতজন সদস্য মিলে একটি রুমে ভাগাভাগি করে থাকেন তারা।
রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলি হোসাইন খান জানান, “আমাদের রুমের সংকট রয়েছে বলে বাধ্য হয়ে এভাবে থাকতে হচ্ছে। চিকিৎসক ও ডাক্তারদের মতো আমাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।”
এপ্রসঙ্গে, সহকারী মহাপরিদর্শক (গণমাধ্যম) মো. সোহেল বলেন, সকল পুলিশ সদস্যদের ব্যক্তিগতভাবে পরিচ্ছন্নতা মেনেই ডিউটিতে আসতে হবে। যদিও এসময় তিনি পুলিশদের নিরাপত্তার্থে আরও বেশি পিপিই ও পরিচ্ছন্নতাসামগ্রী বলেও স্বীকার করেন।
Ad :
Ad :
No comments:
Post a Comment
Note: Only a member of this blog may post a comment.